অনুষ্ঠানের ফাঁকে বিজ্ঞাপন প্রচার করে এমন বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশের কেবল অপারেটররা। সরকারি নির্দেশনায় ১ অক্টোবর এসব চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রাখা হয়েছে। ক্লিন ফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার দেশে বন্ধ রাখার সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন ও সন্তুষ্টি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)। তবে সংগঠনটি বলছে, এটা কিছুতেই যাতে ব্ল্যাকআউটের পর্যায়ে না যায়, বরং আইন মেনে আবার সম্প্রচারে আসে।
শনিবার সন্ধ্যায় অ্যাটকোর এক ভার্চুয়াল কনফারেন্সে সরকারের এই নির্দেশনার প্রতি সমর্থনের কথা জানান একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সংগঠনটির সিনিয়র সহসভাপতি মোজাম্মেল বাবু।
মোজাম্মেল বাবু বলেন, ‘ক্যাবল টিভি নীতিমালা ও বিধি অনুসারে বিদেশি চ্যানেলগুলোর দেশে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে ক্লিন ফিড সম্প্রচার বা বিজ্ঞাপন শূন্য সম্প্রচারে যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেটা বলবৎ করার জন্য সরকার ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। এ সময়ের মধ্যে ক্লিন ফিড সম্প্রচার করতে অপারগ হলে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা আগেই দিয়েছিল। ১ অক্টোবর থেকে যেসব চ্যানেল ক্লিন ফিড সম্প্রচারে ব্যর্থ হয়েছে ক্যাবল অপারেটরদের সেসব চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ কার্যকর হয়েছে বলেই আমরা জেনেছি।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশে এ আইন বলবৎ আছে। আমাদের দেশের কোনো চ্যানেলও যদি বিদেশে সম্প্রচার করতে চায় তাহলে এই আইন মেনে চলতে হয়। দেশে ২০০৬ সাল থেকে এই আইন বলবৎ আছে। ২০১০ সালের বিধিমালায় এটা আরও স্পষ্ট করা হয়েছে। স্যাটেলাইট চ্যানেল ডিস্ট্রিবিউটরদেরও ডাউনলিংকের অনুমতির ক্ষেত্রেও এই বাধ্যবাধকতা মেনে চলার শর্ত আরোপ করার কথা রয়েছে। এরপরও যেহেতু কাজ হচ্ছিল না সরকার কঠোর পদক্ষেপ ও আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। অ্যাটকোর পক্ষ থেকে সরকারের এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। তবে ক্যাবল অপারেটরদের পক্ষ থেকে সময় চেয়ে যে আবেদন করা হয়েছে সেটা সরকার বিবেচনা করবে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই ‘
মোজাম্মেল বাবু বলেন, ‘দেশীয় বিজ্ঞাপন বিদেশি চ্যানেলে পাচার ও বিদেশি চ্যানেলের মাধ্যমে অ্যাড ওভারফ্লোর অ্যাডভান্টেজের মাধ্যমে আমাদের প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দেশের চ্যানেল, পত্রিকা ও পোর্টালগুলো খোয়াচ্ছে। এর ফলে সরকার অন্তত ৩০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এটা অনন্ত কাল চলতে পারে না। সরকার যে অবস্থান জানিয়েছে তা আমরা সাধুবাদ জানাই।
তিনি বলেন, ‘এটা কিছুতেই যাতে ব্ল্যাকআউটের পর্যায়ে না যায় এবং ক্রমান্বয়ে চ্যানেলগুলো যাতে আইন মেনে সম্প্রচারে আসে। গ্লোবাল ভিলেজে কোনো চ্যানেল নিষিদ্ধ হোক বা কোনো দেশে বাধাপ্রাপ্ত হোক সেটা আমরা চাই না। আমাদের চ্যানেলেও বাইরে প্রচারে বাধাগ্রস্ত হোক আমরা যেমন চাই না তেমনি বিদেশি চ্যানেলও দেশে সম্প্রচার করার ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হোক সেটা আমরা চাই না। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞাও নেই। তবে কেউ কেউ এর অপব্যাখ্যা করছে। বিজ্ঞাপনশূন্য সম্প্রচার করলে যেকোনো চ্যানেল সম্প্রচারে সরকারের আজ থেকেই বাধা থাকার কোনো কারণ নেই।’